নাস্তিকতা আসলে কী?

 


নাস্তিকতা মানে সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসহীনতা নয়, বরং সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে প্রচলিত মতবাদগুলোকে চ্যালেঞ্জ করার মানসিকতা। এ ধরনের চ্যালেঞ্জ আবশ্যক, কারণ প্রচলিত ধর্মগুলো সব কম-বেশি মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। নাস্তিকতা মানে - 'ঈশ্বর একজন থাকতে পারেন, তবে তিনি ইসলামে বর্ণিত আল্লাহ নন, বা খ্রিস্টধর্মের যীশু নন, এছাড়া হিন্দু ধর্মের ভগবানও নন।' 

ধর্মগুলো এই কারণে ভুয়া যে, সেগুলো মানব সম্প্রদায়ের কেবল বিগত ৫০০০ বছর বা ১০০০০ বছরের ইতিহাস পর্যলোচনা করে। কিন্তু বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, আধুনিক বুদ্ধিসম্পন্ন মানব জাতির ইতিহাস প্রায় ২ লক্ষ বছরের। এর আগেও মানুষ ছিল, তবে তারা অতটা বুদ্ধিসম্পন্ন ছিল না, তারা অনেকটা 'বন মানুষ' বা গরিলা টাইপের ছিল, বুদ্ধিশুদ্ধিও ঐ লেভেলের ছিল।

ধর্মগুলো ভুয়া হওয়ার আরেকটি কারণ হলো - এরা এভোলুশন বা বিবর্তনবাদকে স্বীকার করে না। প্রচলিত ধর্মসমূহের মতে, মানুষকে ঈশ্বর বা ভগবান অলৌকিকভাবে সৃষ্টি করেছেন - যেটা আদতে সত্য নয়। মানুষ রাতারাতি বা অভারনাইটে সৃষ্টি হয় নি, যুগ যুগ ধরে প্রাণীর বিবর্তনের মাধ্যমে মানব সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ এখনো বিবর্তিত হচ্ছে, যার প্রমাণ হলো - মানুষরূপী অমানুষেরা জঘণ্য কাজকর্ম করে চলেছে দুনিয়াজুড়ে। এ ধরনের ঘটনা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেটা প্রমাণ করে যে, এখনো মানুষের বিবর্তন চলছে। বস্তুত প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় টিকে থাকার জন্য মানুষ বিবর্তিত হয়ে দিনদিন আরো নির্মম ও পাষাণ হয়ে যাচ্ছে, তাদের বিবেকবোধ কমে যাচ্ছে, মূল্যবোধ পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে।

প্রচলিত ধর্মগুলো ভুয়া হবার আরেকটি কারণ হলো, এরা বিজ্ঞানের কোনো শাখাকেই ঠিকমতো বা যথোপযুক্তভাবে সমর্থন করে না। যেমনঃ বেশিরভাগ ধর্মই বেহেশত-দোযখ, স্বর্গ-নরকের কথা বলে। এ টার্মগুলো পদার্থবিজ্ঞান বা ফিজিক্সের 'শক্তির সংরক্ষণশীলতার নীতি'কে সমর্থন করে না। বেহেশতে গিয়ে মানুষ যা চাইবে, তাই পাবে - এমনটা হতে পারে না।

Comments

Popular posts from this blog

ওরা আমাদের আত্মীয়

নাস্তিকদের শেষকৃত্য